দেশ–বিদেশের সমন্বয়ে রুখল আত্মহত্যা


দিল্লির বাসিন্দা ২৭ বছরের এক ব্যক্তির আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করেছিলেন ফেসবুকের এক কর্মী। ওই ব্যক্তি এমন কয়েকটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন যাতে তাঁর আত্মহত্যার প্রবণতা ফুটে উঠেছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হল ওই ব্যক্তিকে। লকডাউনে আর্থিক অনটনের জেরে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। আত্মহত্যা করার আগে ওই যুবক ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিওটিতেই এমন কিছু ইঙ্গিত ছিল, যা দেখে মনে হয় তিনি আত্মহত্যা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কিভাবে রোখা সম্ভব হল?‌ প্রথমে, বিষয়টি লক্ষ্য করে সুদূর আয়ারল্যান্ড থেকে দিল্লি পুলিশকে ফোন করে জানান তিনি। কারণ ফেসবুকে শেয়ার করা ওই ব্যক্তির ফোন নম্বরটি দিল্লিতে নথিভুক্ত। আয়ারল্যান্ডের ওই ফেসবুক কর্মীর তৎপরতা, দিল্লি আর মুম্বই পুলিশের মধ্যে অনবদ্য সমন্বয়ে হয়ে গেল অসাধ্য সাধন। ২৭ বছরের ওই ব্যক্তি যে ভিডিও পোস্ট করেছিলেন তাতে দেখা যাচ্ছিল যে, তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফেসবুকের মনে হয়েছিল ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে হয়তো তাঁকে আত্মঘাতী হওয়া থেকে আটকানো যেতে পারে। তাই ফেসবুক দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

ফেসবুক সংস্থার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় দিল্লির ডেপুটি কমিশনার (সাইবার) অন্বেষ রায়ের সঙ্গে। ফেসবুকে ওই যুবকের ফোন নম্বর নথিভুক্ত ছিল। সেই সব কিছু দিয়ে, যুবকের সন্দেহজনক ভিডিও’‌র কথা জানিয়ে মেল করা হয় রায়কে। তখনই সক্রিয় হয় দিল্লির সাইবার দপ্তর। ফোন নম্বরটি পূর্ব দিল্লির বাসিন্দা এক মহিলার। সেই নম্বর ট্র্যাক করে ওই মহিলার বাড়ি পৌঁছয় দিল্লি পুলিশ। কিন্তু সেখানে গিয়ে চমক। ওই মহিলা তো একদমই সুস্থ রয়েছেন।

এরপর ওই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়, যখন জানা যায় যে ওই ব্যক্তি মহিলার স্বামী এবং তিনি দিন কয়েক আগেই স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে মুম্বই চলে গিয়েছেন। মহিলার কাছে তাঁর স্বামীর ফোন নম্বর থাকলেও মুম্বইয়ে তিনি কোথায় আছেন, তা জানা ছিল না। ডিসিপি রায় তখন মুম্বই পুলিশের ডিসিপি (ক্রাইম) রেশমী কারাণ্ডিকরকে ফোন করেন। ততক্ষণে কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। ওই ব্যক্তি তখনও বেঁচে আছেন কিনা, তাও জানা নেই। রেশমী কারাণ্ডিকর ওই মহিলার দেওয়া নম্বরে বারবার ফোন করলেও তা আনরিচেবল মেলে।

উপায়ান্তর না দেখে ওই যুবকের মাকে দিয়ে ভিডিও কল করানোর চেষ্টা করা হয় হোয়াটসঅ্যাপে। কিন্তু সেটা বারবারই কেটে যেতে থাকে। তারপরে ওই যুবক নিজেই মাকে কল করেন, অন্য একটা নম্বর থেকে। রেশমি জানান, ফোনে যোগাযোগ হওয়া মাত্র আমাদের এক অফিসার ওর সঙ্গে কথা বলে ওকে ব্যস্ত রাখে। আর অন্য একটি দল বেরিয়ে যায় নির্দিষ্ট লোকেশন ট্রেস করে। অবশেষে রাত দেড়টায় ওই যুবকের ঘরে পৌঁছয় মুম্বই পুলিশ। রুখে দেওয়া সম্ভব হয় ওই যুবকের আত্মহত্যা।

Post a Comment

[blogger][facebook][disqus]

Author Name

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
satta king tw