দিল্লি–দাঙ্গার ঘটনায় পুলিশের চার্জশিটে নাম উঠল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, স্বরাজ অভিযানের নেতা যোগেন্দ্র যাদব, অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ এবং তথ্যচিত্র নির্মাতা রাহুল রায়ের। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এঁরা প্রত্যেকেই ভারত সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করেছেন। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশকেই দলদাস বলে কটাক্ষ করে সমালোচনায় নেমেছে বিরোধীরা। যদিও দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে রবিবার বলা হয়েছে, সীতারাম ইয়েচুরিদের অভিযুক্ত হিসেবে চার্জশিটে নাম দেওয়া হয়নি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের একজন এই নেতাদের নাম বলায় তাঁদের নাম চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত হিসেবে নয়।
পুলিশের খাতায় এঁরা সবাই ফেব্রুয়ারি মাসের দিল্লি দাঙ্গায় ষড়যন্ত্রকারী। নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা থেকে শুরু হওয়া ওই হিংসায় মারা যান ৫৩ জন। আহত হন ৫৮১ জন। গুলিতে আহত হন ৯৭ জন। ওই হিংসায় মৃত্যু হয় আইবি’র এক অফিসারের। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে দিল্লি পুলিশ এই নামগুলি যুক্ত করেছে। তাতে নাম রয়েছে ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর, উমর খালিদ–সহ আরও কিছু নেতার।
দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, ওইসব বিশিষ্ট লোকজন নাকি নাগরিকত্ব আইনের বিক্ষোকারীদের উস্কেছিলেন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করেছিলেন। দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করেছেন। সংসদের বাদল অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে এই চার্জশিট ঘিরে রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইয়েচুরি বলেন, ‘দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন এবং এটা বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের রাজনীতির বেআইনি পদক্ষেপের প্রত্যক্ষ ফল। মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলির বৈধ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখে ওরা ভয় পেয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির অপব্যবহার করছে।’
গোটা পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, দিল্লি পুলিশ আরএসএস ও বিজেপি’র শাখা হিসাবে কাজ করছে। স্বৈরাচারি মনোভাব দেখাচ্ছে সরকার। কেউ কিছু বলতে পারবে না, চুপ করে থাকতে হবে। কেন্দ্র প্রতিটি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সক্রিয়ভাবে কাজে লাগাচ্ছে। আজ সীতারাম ইয়েচুরিকে ফাঁসানো হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কটাক্ষের সুরে বলেন, বিজেপি এবার হয়ত গোটা দেশের ইতিহাস পালটে ফেলবে। দেখা যাবে গুজরাট হিংসার জন্যও কোনওদিন জওহরলাল নেহরুকে দায়ী করে বসবে।
Post a Comment