মহা ধুমধাম ও সমারোহের মধ্যে দিয়ে পালিত হলো অযোধ্যার
রামমন্দির নির্মাণ এবং রামজন্মভূমির বহু প্রতীক্ষিত ভূমিপূজো । তিনদিন ধরে চলতে থাকা
অকাল দীপাবলীর অপূর্ব আলোকসজ্জা, ভজন-সাধন, পূজোপাঠ, শ্রীরাম শ্রীরাম জয়ধ্বনি এবং বিকানেরি
আর রঘুপতি লাড্ডু বিতরণের মধ্যে দিয়ে সুসম্পন্ন হলো বিতর্কিত রামজন্মভূমির ভূমিপূজো
।
গতকাল সরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সম্প্রসারণের
মাধ্যমে দেশবাসী মহা আনন্দ ও গৌরবের সাথে উপভোগ করেছে যোগী রাজ্যের ঐতিহাসিক ভূমি পূজোর
দৃশ্য ।
২০ একর জমিতে ৫টি উঁচু চূড়া বিশিষ্ট ১৬১ ফুটের
রামমন্দির নির্মাণ করতে মোটামুটি যে ভালোই খরচ হতে পারে সেটা অনায়াসেই আনুমান করা যায়
। শেষমেশ যদি দেখা যায় যে মন্দির নির্মাণের ডোনেশন বাবদ প্রধানমন্ত্রীর কাছেই ট্রাস্ট
ওই খরচ মেটানোর আবদার করে বসে -- তাহলেই বিপদ । কারণ, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ফলে দেশের
অর্থনীতি যে শূন্যে ভাসছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে মোদিজিও ওই একই শূন্যে ভাসমান । কারণ
বিমান, রেল পরিসেবা এখনো বন্ধ, তার ওপর একাধিক বাণিজ্যিক সংস্থা এখনো নিজেদের সম্পূর্ণ
সচল করে উঠতে পারেনি ।
লকডাউনের শুরু শুরুতে এদিক ওদিক থেকে ত্রান তহবিলে টাকা ঢুকেছিলো
ভালোই, কিন্তু তার বহুলাংশই খরচা হয়ে গেছে কোভিড সেনাদের ফুল ছিটিয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে
সন্মান জানাতে গিয়ে । কাজেই নিজে হাতে রামমন্দিরের ভূমিপূজোর শুভারম্ভ করলেও নির্মানকল্পে
মুক্তহস্তে দান করা মোদিজির পক্ষে সম্ভব নয় বলেই মনে হয় । আশা করা যায় "রামজন্মভূমি
তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট"এরও মাথায় আছে বিষয়টা । আর তাই ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মন্দির
নির্মাণের টাকা তোলার সব দিক আগেভাগেই ঠিক করে রাখা হয়েছে । যাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদির ওপর কোনো চাপ না আসে ।
রামমন্দির নির্মাণে ক'পয়সা খরচা হতে পারে ? আর
কোথা থেকে বা কিভাবে আসবে সেই পয়সা ?"রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট"
এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রামমন্দির নির্মাণের মূল বাজেট ৩০০কোটি টাকা, কিন্তু রামজন্মভূমির
প্রস্তাবিত ২০ একর জায়গা জুড়ে অন্যান্য নির্মাণকাজের খরচ নিয়ে মোট বাজেটের পরিমান ১০০০কোটি
টাকা ।
আর তিনমাস পর অর্থাৎ ২৫শে নভেম্বর থেকে ২৫শে
ডিসেম্বর পর্যন্ত এই একমাস ধরে দেশজুড়ে চলবে ওই অর্থ সংগ্রহ অভিযান ।
ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক
দল ছোট ছোট ইউনিটে বিভক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে, এবং প্রত্যেক দেশবাসীর
ঘরে ঘরে গিয়ে রামমন্দির নির্মাণের চাঁদা তুলবেন ।
চাঁদার মোট সংগৃহিত অর্থ ট্রাস্টে জমা হওয়ার
পর ডিজাইন আর্কিটেক্ট, ইঞ্জিনিয়ার এবং ট্রাস্টের যৌথ মতামতের সবুজ সংকেত ঘোষিত হওয়ার
পরই আরম্ভ হবে ভূমিপূজো পরবর্তী রামমন্দির নির্মাণের আসল কাজ ।
আপাতত ৫টি চূড়া বিশিষ্ট মন্দিরের উচ্চতা ১২৮
ফুট হওয়ার পরিকল্পনা, কিন্তু প্রয়োজনে তা বেড়ে ১৬১ ফুট হয়ে যেতে পারে ।
নির্মাণকাজ চলাকালীন দেশের বড় বড় বানিজ্যিক
প্রতিষ্ঠান এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলোর কাছে রামমন্দির নির্মাণকার্যে স্বেচ্ছায় মুক্তহস্তে
বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করার সবিনয় আবেদন নিবেদন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে "রামজন্মভূমি
তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট"এর পক্ষ থেকে ।
Post a Comment