ভারতের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ১০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির উপর নজর রেখেছে চিন। সেই তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
চিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এই কাজ করে চলেছে শেনজেনের একটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি। চাঞ্চল্যকর তথ্য হল— চিনের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি ভারতের বহু বিষয়ে নজরদারি চালাচ্ছে বলে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দাবি করেছে। তারপর থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এই ইংরেজি দৈনিকের বক্তব্য, ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর–সহ অন্তত ১০ হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপর নজরদারি চালাচ্ছে শেংঝেনের এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। ওই সংস্থাটি তথ্য সরবরাহ করে চিন সরকার, চিনের কমিউনিস্ট পার্টি, চিনের সেনা–সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজনীতি, বিনোদন, ক্রীড়া, সংবাদমাধ্যম— এমনকী অপরাধী ও জঙ্গিদের সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে চিনের গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন শহরের ‘শেনহুয়া ডেটা ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড’ নামে ওই সংস্থা। তাদের অন্যতম গ্রাহক শি জিনপিং সরকার, চিনের সেনাবাহিনী পিপল্স লিবারেশন আর্মি এবং চিনের কমিউনিস্ট পার্টি।
এই নজরদারি তালিকায় কারা রয়েছে? প্রতিবেদনে উল্লিখিত নামের তালিকা অনুযায়ী— রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও পরিবারের সদস্যরা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, রাজনাথ সিং, নির্মলা সীতারামন, স্মৃতি ইরানি, পীযূষ গোয়েল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক, রাজস্থানের অশোক গেহলট, মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে, পাঞ্জাবের অমরেন্দ্র সিংহ–সহ আরও অনেকে। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে, রতন টাটা, গৌতম আদানির মতো শিল্পপতি এবং বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের সম্পাদক, ইউপিএ আমলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রাক্তন মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বারু এবং বিভিন্ন সাংবাদিক রয়েছেন ওই সংস্থার নজরদারিতে।
ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের উপর নজরদারি চালাচ্ছে চিন। তালিকায় রয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ আমলা, বিচারপতি, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, অভিনেতা, ক্রীড়াব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় নেতা ও সমাজকর্মীরাও।এমনকী অর্থনৈতিক অপরাধ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ এবং নারকোটিকস, সোনা, অস্ত্র ও বন্যপ্রাণ পাচারকারী–সহ কয়েকশো অভিযুক্তকেও নজরে রেখে চলেছে চিনের এই কোম্পানি।
Post a Comment