প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র

প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র 

প্রয়াত হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র । বুধবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বর্ষীয়ান এই নেতা । তাঁর বয়স হয়েছিল 76 বছর । কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন । তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক, নার্সিংহোম সূত্রে এই খবর আগেই জানানো হয়েছিল । 

এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখতে হলে নিচের  'প্লে বাটনে' ক্লিক করুন...


মূলত তাঁর শরীরে বসানো পুরাতন পেসমেকার পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যেই নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি । আপাতত তাঁর ডায়ালাইসিস চলছিল । শরীরে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা বেশি হওয়ার কারণে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল । 


যদিও মঙ্গলবার তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল । এমনকি সোমেন বাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার নার্সিংহোমের ভেতরে তিনি অল্পবিস্তর হাঁটাচলাও করেছেন । স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছেন বেশ কয়েকজন শুভানুধ্যায়ী সঙ্গে। কিন্তু বুধবার বেশি রাতের দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন সোমেন মিত্র । আর এর কিছু সময়ের মধ্যেই প্রয়াত হন প্রদেশ কংগ্রেসের এই বর্ষিয়ান সভাপতি । প্রদেশ কংগ্রেসের তরফ থেকে রাতেই এক টুইট বার্তায় প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র প্রয়াত হওয়ার খবর জানানো হয় । তাঁর এই প্রয়ানের মধ্য দিয়ে বাংলার কংগ্রেস রাজনীতিতে আরও একটা যুগের অবসান ঘটলো , এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

 

 নব্বইয়ের দশকেও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন সোমেন মিত্র । সেই সময় মতপার্থক্য ও সাংগঠনিক নির্বাচনে পরাজয়ের পর কংগ্রেস দল ত্যাগ করে বেরিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ঠিক পরপরই 1998 সালের নির্বাচনে খারাপ ফল হওয়ার দায়ভার কাঁধে নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সোমেন বাবু।

 

এরপর প্রায় দীর্ঘ কুড়ি বছর পরে 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফের একবার এই বর্ষীয়ান নেতার হাতেই প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব ভার তুলে দেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সোনিয়া ও রাহুল ব্রিগেড। তাঁর এই চলে যাওয়া, নিশ্চিত করেই বাংলার রাজনীতিতে একটা শূন্যতার সৃষ্টি করলো।

 বাংলার রাজনীতিতে তিনি ছোড়দা নামেও পরিচিত ছিলেন কংগ্রেসের নেতা কর্মী কিংবা সমর্থকদের কাছে । কলকাতার শিয়ালদহ বিধানসভা আসন থেকে একাধিকবার বিজয়ী হয়ে বিধায়ক হন এই বর্ষীয়ান নেতা l শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে কংগ্রেসের উপর কিছুটা অভিমান করেই দল ছেড়েছিলেন কংগ্রেসের ছোড়দা । তৈরি করেছিলেন নিজের নতুন দল, "প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস"। 

যদিও এর কিছুদিন পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে 2009 সালে রাজ্যের ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন সোমেন মিত্র । কিন্তু এখানেও বেশিদিন থাকতে পারেননি তিনি । 2014 লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে আবারো তাঁর পুরনো দল কংগ্রেসেই ফিরে আসেন সোমেন বাবু ।


 রাজনৈতিক দিক থেকে মতপার্থক্য থাকলেও সোমেন মিত্রের এই অসুস্থতার মুহূর্তে প্রতিনিয়ত তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  মাঝে একদিন আরোগ্য কামনায় ফুল ও শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠান তৃণমূল নেত্রী। আরেক কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর সঙ্গেও সোমেন বাবুর তীব্র মতপার্থক্য থাকলেও,  এই পরিস্থিতিতে অধীর বাবুও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন সোমেন বাবুর পরিবারের সঙ্গে।

 

 আসলে নার্সিংহোম সূত্রে তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলার পর থেকেই সবার মনেই একটা শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হলো। বুধবার মধ্যরাতে সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন কংগ্রেসের অতি প্রিয় ছোড়দা, সৌমেন্দ্র নাথ মিত্র।



Post a Comment

[blogger][facebook][disqus]

Author Name

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.
satta king tw